পুঁজিবাজারে ফের সূচকের বড় পতন
প্রকাশিত : ১৭:২৯, ২১ জুলাই ২০১৯
সূচকের বড় ধরনের পতনের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শেষ হয়েছে আজ রোববার (২১ জুলাই)। এদিন লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দরপতনের প্রভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবগুলো সূচকেই বড় পতন হয়েছে।
চলতি জুলাই মাসের ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে ১১ দিনই সূচকের পতন হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৫ জুলাই এক দিনের দরপতনেই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের লোকসান হয়েছে ২ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ধস নামার পর মাঝে কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও কখনো স্বস্তিতে ছিলেন না বিনিয়োগকারীরা। আওয়ামী লীগ সরকার নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। বিশেষত জানুয়ারির পর টানা কয়েক মাসের দরপতনের প্রেক্ষাপটে তিনি বাজেটে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণায় অনেক বিনিয়োগকারী আশ্বস্ত ছিলেন। কিন্তু বাজেট ঘোষণার পর হতাশ হয়েছেন তারা। ফলে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। বাজেট পাসের পর দরপতনের মাত্রা বেড়েছে।
রোববার ডিএসইতে ৩৫২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৬৩টির ও কমে ২৬৭টির। আর ২২টি লেনদেন হয় আগের দিনের দরে।
বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনের প্রভাবে এদিন ডিএসইর সবগুলো সূচকেই বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৯৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩১ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া ডিএসইএস সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৭ পয়েন্টে ও ডিএসই৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এদিন ডিএসইতে প্রায় ৩৫৭ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা কম।
এদিকে ডিএসইর মতো রোববার সিএসইতেও বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এই স্টক এক্সচেঞ্জে এদিন ২৭০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৩৪টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দরপতন হয়েছে ২১৮টির। আর আগের দিনের দরে অপরিবর্তিত থেকেছে ১৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন হওয়ায় রোববার ডিএসইর মতো সিএসইর সবগুলো সূচকেও বড় ধরনের পতন হয়েছে। সিএসই৫০ সূচক আগের দিনে চেয়ে ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে, সিএসই৩০ সূচক ২২৩ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৭২১ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ১৭৮ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে, সিএএসপিআই সূচক ২৯৯ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৪২৪ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
এদিন সিএসইতে প্রায় ১১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা কম।
সাম্প্রতিক সময়ের শেয়ারবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজেট ঘোষণার আগে গত ২৬ মে থেকে ১৩ জুন (সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করার আগ পর্যন্ত) অধিকাংশ শেয়ারের বাজারদর বেড়েছিল। এতে ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছিল প্রায় ২২৪ পয়েন্ট। বাজার মূলধন ১৬ হাজার ২৫১ কোটি টাকা বেড়েছিল। কিন্তু বাজেট ঘোষণার পর গত ১৬ জুন থেকে দরপতন হচ্ছে। এ সময়ের ২৪ কার্যদিবসের ১৬ কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন